Header Ads

Header ADS

প্রেমের গল্প, বেঈমানের ভালোবাসা - পর্ব ১(লেখকঃ আফরিন শুভ) Love story

             বেঈমানের ভালোবাসা - পর্ব ১ 
                  লেখকঃ আফরিন শুভ

বিয়ে হওয়ার পর বাবার বাড়ি থেকে চোখের জল বিসর্জন দিয়ে স্বামীর হাত ধরে এসেছিলাম। আমার আজ বিয়ে হয়েছে অনেক স্বপ্ন ছিল এই দিনটা নিয়ে আর যার সাথে বিয়ে হয়েছে তাকে নিয়েও। আমার ভালোবাসা আকাশকে বিয়ে করতে পেরে আমার যে খুশির কোন সীমা নেই। আমি আজ তাকে পেয়েছি যাকে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজ এমন একটা দিন গেল আমি তার মুখটায় দেখলাম না। এখন পর্যন্ত চোখে দেখলাম না। তাও যা দেখেছি তার মুখে সে রুমাল দিয়ে রেখেছিল মনে হচ্ছে সেই বউ। যাক এসব নিয়ে এখন আর কথা বলবোনা।

বাসরঘরে বসে আছি তার অপেক্ষায়। সে এখনো আসছেনা অথচ তার এই দিনটার জন্য কতো ইচ্ছা জমা ছিল তা তো আমি খুব ভালো করেই জানি। আমি তাকে খুব ভালোবাসি খুব। সেও আমায় খুব ভালোবাসে। দুদিন আগেও সে আভায় ফোন করে বলল

 তারা আমাদের যদি ছেলে বাবু হয় নাম রাখবো ভতা আর মেয়ে বাবু হলে নাম রাখবো ভুতি। কেমন?

তার এই কথা শুনে আমি হাঁসবো না কান্না করবো নাকি অবাক হবো বুঝতেই পারছিনা। এটা কোন নাম হলো শেষে কি না আমার সন্তানের নাভ এতোটাই আজগুবি হবে! জাস্ট ভাবতে পারছিনা। তখন ই তাকে ধমক দিয়ে বললাম

 এমন আজগুবি নাম রাখলে আমি কিন্তু তোমায় বিয়ে করবোনা।

এই না না আর বলবো না। স্যরি । এই তোমার জন্য আমি কম যুদ্ধ করলাম তোমায় পেতে 6 টা বছর আমাকে সাধনা করতে হলো। তার কি হবে?

আমি ওতো কিছু বুঝিনা। আমার বাবুদের নাম খুব সুন্দর হতে হবে যেমন তোমার নাম আকাশ আমার নাম তারা তাদের নামও এমনটাই সুন্দর হবে। ভতা ভুতি কিন্তু একদম চলবেনা।

ওকে। কিন্তু আমি খুব শখ করে নামটা,,,,

রাখো তোমার শখ

বলেই ফোনটা কেটে দিলাম এবার হাঁসতে হাঁসতে টোটালি গড়াগড়ি খেতে লাগলাম। এটা আবার কেমন নাম আকাশটা পারেও বটে মনে করতেই আমার হাঁসি পাচ্ছে।
হঠাৎ দরজা লাগানোর শব্দে আমার হুস ফিরে। আর হাথে ভয় আর লজ্জাও কাজ করছে। আজ যে আভার আর আকাশের বাসর রাত। আমি মাথার ঘোমটা টা আরো নিচের দিকে টেনে নিলাম। অনেক্ষণ হয়ে গেল আকাশের কোন সাড়া শব্দ নেই তাই আমি না চাইতেও ঘোমটা টা খুলে সাভনের দিকে তাঁকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। একি উনি এখানে কি করছে উনি তো আকাশের বড় ভাই প্রভাত চৌধূরী। এই লোকটা এই ঘরে কেন! কোন আক্কেল জ্ঞান আছে নিজের ভাইয়ের বাসর রাতের দিন তার ঘরে এসে তারই বউয়ের সামনে বসে আছে। আমার খুব রাগ হলো তাই রেগে গিয়ে খাট থেকে নেমে গিয়ে সে যেই সোফাটায় বসে আছে সেখানে গিয়ে বললাম

 আপনি এখানে কি করছেন? আকাশ কোথায়!

আকাশকে দিয়ে তুমি কি করবে?

মানে কি ! আমার স্বামীকে দিয়ে আমি কি করবো মানে কি? আপনি জানেন না যে আজ আপনার ভাইয়ের বাসর রাত। আর আপনি কিনা তার বদলে তার ঘরে এসেই তার বউয়ের সামনে বসে আছেন!

কার বউ?

-লকার বউ মানে আকাশের বউ।
 আমি তো এখানে আকাশের বউকে দেখতে পাচ্ছি না।

আপনার সামনে একটা জ্যান্ত মানুষ দাঁড়িয়ে আছে তাকে কি আপনি চোখে দেখতে পারছেন না ?

দেখতে তো পাচ্ছি কিন্তু সে তো আকাশের বউ নয় আমার বউ।

হোয়াট ! দেখুন আপনি এসব ফালতু বকবেন না। ছি কেউ নিজের ভাইয়ে বউকে এইসব বলতে পারে। আকাশ কোথায়! আকাশ কোথাই তুমি দেখ তোমার ভাই এখানে এসে কিসব যা তা বলছে। তুমি কোথায় আকাশ!( জোরে চিল্লিয়ে)

হেই তোমার কথা কানে যায় না ? তুমি আমার ভাইকে এভাবে ডাকছো কেন সে নেই এখানে।(রেগে)

-নেই মানে! ও কোথায় একটু আগেই তো আমার আর আকাশের বিয়ে হলো।

shut up...আকাশ নয় আমি তোমার স্বামী একটু আগে আকাশের সাথে না আমার সাথে তোমার বিয়ে হয়েছে।

কথাটা শুনেই আমার মাথা ঘুরতে লাগলো এটা উনি কি বলছেন উনি যে মজা করছে তাও নয়। আকাশ আর প্রভাত একই মায়ে পেটের হলেও দুজনের স্বভাবের আকাশ পাতাল পার্থক্য একজনের সাথে আরেকজনের স্বভাবের কোন মিল নেই। আকাশ হাঁসি খুশি তো প্রভাত খুব রাগী আর বদ মেজাজী। উনার মুখের কথা গুলো আর মুখের ভাবটা স্পষ্ট বলে দিচ্ছে উনার একটা কথাও মিথ্যে নয়। তাহলে কি সত্যিই আমি ওনার ,,,,, না এ হতে পারে না আকাশ আমায় চকাতে পারে না। সে যে কথা দিয়েছিল সে আমাকে বিয়ে করবে এমন হতে পারে না পারে না এমন হতে।
খাটের এক কোণে শাড়ি কোন মতে পেঁচিয়ে বসে বসে কাঁদছে তারা। চোখের জলে সব যেন ভাঁসিয়ে ফেলছে। আকাশ তার সাথে এত বড় প্রতারণা করতে পারলো কিভাবে! সে কি জানে না এতে যে তারা মরেই যাবে। পেছনে ফিরে দেখছে প্রভাত আরামসে ঘুমাচ্ছে। এই লোকটা খুব খারাপ লোক একে দেখলেই এখন তারার ঘৃণাতে দুচোখ ভরে যাচ্ছে।

FlashBack

তখন তারা যখন প্রভাতের মুখে এসব কথা শুনলো তখন ও প্রভাত ঠাস করে একটা চড় মারে।

 আপনার সাহস হয় কিভাবে এসব বাজে কথা বলার! আপনি একটা দুশ্চরিত্র লোক। আপনাকে প্রথম থেকেই আমার ভালো লাগতো না। কিন্তু আপনি এখন যা বলছেন তাতে আপনি আপনার চরিত্রের প্রমাণ দিচ্ছেন। আপনি বেড়িয়ে যান এই ঘর থেকে আর আকাশ কোথায়? আমি আজ আকাশকে সব বলবো। আকাশ আপনাকে এত মান্য করে আর সেই আপনিই কিনা তার বউয়ের রুমে ঢুকে এমন অসভ্যতামি করছেন? আকাশ আকাশ

আর কিছু বলার আগেই প্রভাত তারার দুই বাহু চেপে ধরলো আর বলল

তোর আমাকে এত কিছু বলার সাহস হয় কি করে ? আমার ঘর থেকেই আমাকে যেতে বলছিস! আর আকাশের কথা বলছিস! ও চায় না তোকে বিয়ে করতে তাই ও লন্ডন চলে গেছে।

আমি বিশ্বাস করি না। আপনি মিথ্যা কথা বলছেন আমার আকাশ আমাকে ঠকাতে পারে না।

হুহ। আকাশ তাই করেছে যা ও চেয়েছে এতে আমার কোন হাত নেই বুঝেছো!(দাঁতে দাঁত চেপে)

না এই টা কিভাবে সম্ভব ও তো আমায় ভালোবাসে। আপনি মিথ্যেবাদী আপনি এখন আমাকে ইচ্ছে করে মিথ্যা কথা বলছেন। আমার আকাশ কোথায় সত্যি করে বলুন।

একবার বললে কানে যায়না? বললাম তো আকাশ নেই তুমি এখন আমার স্ত্রী পর পুরুষের নাম নিচ্ছো কেন?(রেগে গিয়ে)

ছাড়ুন। আপনি একটা লম্পট দুশ্চিরত্র আপনার চরিত্রের দোষ আছে আপনি একটা বাজে লোক খারাপ লোক তাই আপনি এমন করছেন সরে যান এখান থেকে। যান বলছি।(চিৎকার করে)

কি বললি আমি লম্পট আমার চরিত্রের ঠিক নেই ? আজ তোকে দেখাবো যে আমি কতোটা ভয়ানক হতে পারি যখন কেউ আমার মুখের উপরে কথা বলে আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে😠😠😠😠(তারার চুলের মুঠি ধরে)


প্রভাত তারাকে ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে দিল তারপর ঝাপিয়ে পড়লো তারার উপর তারা অনেক আকুতি মিনতি করেছিল ওকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য কিন্তু প্রভাত কোন কথা শুনলো না নিজের অধিকার ঠিকই আদায় করে নিল। জোর করে হোক বা যেভাবেই হোক নিজের ভালোবাসার মানুষকে একেবারে নিজের করে নিল সে আজ।

একজনের ভালোবাসা হয়তো হারিয়ে গেল তবে আরেকজনের ভালোবাসা ঠিকই পাওয়া হয়ে গেল।

বর্তমান

তারার হাত টান দিয়ে বেডের মধ্যে ফেলে দিয়ে প্রভাত তারার উপরে উঠে গেল আর বলতে লাগলো

যা হয়েছে তা হওয়ারই ছিল। এমন কিছু করোনা যার ফল আরো খারাপ হয় এখন চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়। আর একটা শব্দ যদি পাই তাহলে আজ তোমার কপালে শনি আছে (ধমক দিয়ে)

তারা ভয় পেয়ে গেল কিছু বললনা। আর প্রভাত তারার বুকেই নিজের মাথা রেখে ঘমিয়ে পড়লো। প্রভাতের মুখে তৃপ্তির হাসি তাও চোখ থেকে দু ফোটা অবাধ্য পানি গড়িয়ে পড়লো সে যে তার তারাকে এভাবে কষ্ট দিতে চায়নি। তারা নিশব্দে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো।

সকালে,,,,

ঘুম থেকে উঠে তারা তার পাশে প্রভাতকে দেখলো না নিজের দিকে তাকিয়ে আবারো কেঁদে উঠলো। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় শাড়িটাও গা থেকে সরে গেছে। তার সাথে যা হয়েছে ভাবতেই বুক ফেটে যাচ্ছে। না এখন কান্না করলে চলবে না আগে নিজেকে পবিত্র করতে হবে বেডশীট টা জড়িয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিতে থাকলো। এমন তো হওয়ার কথা ছিলো না! কিভাবে হয়ে গেল? অঝোর ধারায় তারার চোখের পানি পড়ছে। শাওয়ার নেওয়ার পর মনে পড়লো সে তো সাথে করে কোনো ড্রেস আনে নি এখন কি হবে! হায় হায় বাহিরে বের হবে কিভাবে! পাশে তাকিয়ে দেখলো শুধু টাওয়েল আছে তাই আর কিছু না ভেবে টাওয়াল টা পেঁচিয়ে বের হয়ে আসলো। আশে পাশে তাঁকিয়ে কাউকে দেখলোনা তাই বের হয় আসলো।

বাসায় কি তুমি শুধু টাওয়াল পেঁচিয়েই থাকতে!

পেছন থেকে কারো এমন কথা শুনে তারা পেঁছন ফিরে দেখলো প্রভাত দাঁড়িয়ে আছে। প্রভাতকে দেখে লজ্জাই শেষ হয়ে যাচ্ছে তারা। এমনেতেও লোকটা খুব বাঝে তার উপর এই ভাবে তারাকে দেখে ফেলে উল্টা পাল্টা কিছু আবার করে না বসে এসব ভাবছে তারা। তখনি প্রভাত আলমারি থেকে একটা রেড কালার শাড়ি নিয়ে আসলো। এসে তারার সামনেই দাঁড়ালো আর বলল

 টাওয়েল টা খুলে ফেল।

 না ( চিৎকার করে)

তুমি না বললেই আমি শুনবো নাকি !

বলেই তারার টাওয়ালটা খুলতে গিয়েও থেমে যায় তারপর তারা কে বলল ব্লাউজ আর পেটিকোট টা নিজে পড়ে নিতে প্রভাত ভালো করেই জানে তারা শাড়ি পড়তে পারে না। তাই ও নিজেই পড়িয়ে দিবে। কিন্তু তারা রাজি হচ্ছিল না তাই প্রভাত আর কোনো কথা না বলেই তারার টাওয়েল টা টান দিয়ে খুলে ফেললো আর নিজেই জোর করে শাড়ি পড়িয়ে দিল তারা শুধু কান্না করতেই লাগলো। আজ যে তার সব শেষ প্রভাত তারার কানের কাছে গিয়ে বলল

লজ্জা পেয়ে লাভ নেই বউ। বিড়াল তো আমি কাল মেরেই ফেলেছিলাম ।

তারার খুব রাগ হলো প্রভাতের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাঁকাতেই প্রভাত ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো তার পর তারার ঘাড়ে গলায় গভীর ভাবে চুমু খেতে লাগলো তারা কিছু করতেই পারছেনা ও যেন বরফের মতো জমে যাচ্ছে চাইলেও প্রভাতকে সরাতে পারছেনা।

নিজেকে সামলাতে পারছেনা প্রভাত। সে যে এক নশায় ডুবে আছে। এদিকে তারার তো অবস্থা খারাপ। না পারছে নড়তে না পারছে প্রভাতকে সড়াতে। দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দে প্রভাতের হুস ফিরলো। তারার আঁচল ঠিক করে গিয়ে দরজা খুললো তখনি একজন মধ্যবয়সী মহিলা রুমে ঢুকলো আর প্রভাতও রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। মহিলাটি আকাশের মা।

তারা! আমি জানি যা হয়েছে তা তোমার মতের বিরুদ্ধে। কি করবো বলো আকাশটা যে এমন করবে ভাবতেই পারিনি। তোমার সম্মানের ব্যাপার ছিল তাই আমার

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.